কমেডিয়ান-গোয়েন্দার লড়াই: দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ভাগ্য বাঁধা ‘একই সুতোয়’?

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একজন সাবেক গোয়েন্দা, বিশ্ব রাজনীতির ঝানু খেলোয়াড়। অন্যজন রাজনৈতিক অঙ্গনে একেবারেই নবীন, সাবেক কমেডিয়ান।

বলা হচ্ছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথা। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত এই দুইজনেরই জন্ম সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে। দুজনের নামের প্রথম অংশেও রয়েছে মিল। তবে তাদের মধ্যে সব মিল এখানেই শেষ।

প্রকাশ্য শত্রু কারাবন্দি রুশ নেতা আলেক্সি নাভালনির মতো জেলেনস্কির নামও কখনো সরাসরি উচ্চারণ করেন না পুতিন। জেলেনস্কির প্রসঙ্গ এলে তিনি তাকে ইহুদি প্রেসিডেন্ট, কিয়েভের প্রধান কিংবা মাদক আসক্ত এবং নব্য-নাৎসিদের প্রধান বলেন উল্লেখ করেন।

পুতিনের সঙ্গে জেলেনস্কির এই বৈরিতা শুরু ২০১৯ সালে জেলেনস্কির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই। নবীন-প্রবীণ এই দুই নেতা সেবারই মুখোমুখি হয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্যারিসে। এরপর তাদের মধ্যে আর সামনাসামনি দেখা না হলেও শত্রুতা চলছেই।

অবশ্য এই দুই সোভিয়েত নেতার মিলের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় বলা যায়। তা হলো সম্প্রতি শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ তাদের ভাগ্য বেঁধে দিয়েছে একই সুতোয়। এই যুদ্ধের কারণে নিজ নিজ দেশের পাশাপাশি দুজনেরই ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পড়েছে ঝুঁকির মুখে। এই যুদ্ধে জয়-পরাজয়ের ওপরই নির্ভর করছে তাদের অস্তিত্ব।

ইউক্রেন ইস্যুতে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়েও পুতিনের পরিকল্পনা যদি সফল হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে শুধু নিজ দেশেই নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও পাকাপোক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবেন দুই দশক ধরে রাশিয়ার ক্ষমতায় থাকা পুতিন। আর ব্যর্থ হলে তুখোড় রাজনীতিবিদ ৬৯ বছর বয়সী পুতিনের অধ্যায় হয়তো শেষ হয়ে যাবে বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনের পাতা থেকে।

পুতিনের তুলনায় জেলেনস্কির অভিজ্ঞতার ঝুলি তেমন ভারি নয় বললেই চলে। মাত্র দুই বছর আগে ২০১৯ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মসনদে বসেন জেলেনস্কি। অবশ্য হঠাৎ চেপে বসা গুরু দায়িত্ব এখন পর্যন্ত ঠিকমতোই পালন করে চলেছেন তরুণ এই নেতা। জেলেনস্কির নেতৃত্বে ইউক্রেনবাসী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এরই মধ্যে পুরো বিশ্বের মন জয় করে নিয়েছেন রাজনীতির মাঠে একেবারেই নবীন ৪৪ বছর বয়সী সাবেক এই কমেডিয়ান। তবে ইউক্রেনের পতন হলে ইতিহাসের পাতায় জেলেনস্কিরও হয়তো সুখ্যাতি করা হবে না। ইউক্রেনের পাশাপাশি মুছে যাবে জেলেনস্কির নামও।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর